Madhyamik history

বিশ শতকের ভারতে কৃষক, শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন: বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা

বিশ শতকের ভারতে কৃষক, শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন

1. বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনে কৃষক সমাজ আগ্রহী ছিল না কেন?

উত্তর:- বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনে কৃষক সমাজের অনাগ্রহের কারণগুলি হল-[1] জাতীয় কংগ্রেস এই আন্দোলনের দ্বারা কৃষকদের অর্থনৈতিক স্বার্থপূরণের উদ্যোগ নেয়নি। [2] আন্দোলনের নেতারা কৃষকদের জন্য সুনির্দিষ্ট কৃষিভিত্তিক কর্মসূচি’-ও গ্রহণ করেনি।

2.মহাত্মা গান্ধির নেতৃত্বে এবং জাতীয় কংগ্রেসের পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলনগুলি কী ছিল?

উত্তর:- মহাত্মা গান্ধির নেতৃত্বে এবং জাতীয় কংগ্রেসের পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলন হয়েছিল তিনটি। যথা- [1] অহিংস অসহযোগ আন্দোলন (১৯২০-২২ খ্রি.), [2] আইন অমান্য আন্দোলন (১৯৩০-৩৪ 3.) এবং [3] ভারত ছাড়ো আন্দোলন (১৯৪২ খ্রি.)।

3.আমেদাবাদ সত্যাগ্রহ কী?

উত্তর:- ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে গুজরাটের আমেদাবাদের বস্ত্র শ্রমিকরা ৫০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির দাবি জানালে মালিকশ্রেণি তাতে কর্ণপাত করেনি। ফলে অস্থিজি এখানকার শ্রমিকদের নিয়ে অহিংস উপায়ে ধর্মঘট ও অনশন শুরু করেন। এটি আমেদাবাদ সত্যাগ্রহ নামে পরিচিত।

4.কংগ্রেস কবে কোন্ অধিবেশনে অহিংস অসহযোগ আন্দোলন শুরু করার প্রস্তাব গ্রহণ করে?

উত্তর:- কংগ্রেস ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে লালা লাজপত রায়ের সভাপতিত্বে লকাতা অধিবেশনে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে অহিংস অসহযোগ আন্দোলন শুরু করার প্রস্তাব নেয়।

5.অসহযোগ আন্দোলনের সময় বাংলার কোন্ কোন্ জেলায় কৃষক আন্দোলন সক্রিয় হয়ে ওঠে?

উত্তর:- অসহযোগ আন্দোলনের সময় বাংলার মেদিনীপুর, পাবনা, বগুড়া, রিভূম, রাজশাহি, রংপুর, কুমিল্লা, দিনাজপুর, বাঁকুড়া প্রভৃতি জেলায় দিক আন্দোলন সক্রিয় হয়ে ওঠে।

6. কৃষক আন্দোলনের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো?

উত্তর:- কৃষক আন্দোলনের দুটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল-[1] অধিকাংশ মিক আন্দোলন ছিল বিক্ষিপ্ত এবং একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে সীমাবদ্ধ।
[2] কৃষক আন্দোলনগুলি কখনও জমিদার-মহাজন-বিরোধী ছিল; আবার কখনও ব্রিটিশবিরোধী ছিল।

7.অসহযোগ আন্দোলনে মেদিনীপুরে কৃষকরা কীভাবে শামিল হয়?

উত্তর:-মেদিনীপুরে ক্ষুদ্র, মধ্যবিত্ত, জোতদার-সকলশ্রেণির কৃষক অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেয়। এখানকার তমলুক ও কাঁথি মহকুমার ইউনিয়ন বোর্ড চৌকিদারি কর বন্ধ করলে আন্দোলন তীব্র হয়ে ওঠে।

৪.অসহযোগ আন্দোলনের সময় উত্তরপ্রদেশে কৃষক আন্দোলন কীরূপ আকার ধারণ করে?

উত্তর:-অসহযোগ আন্দোলনের সময় উত্তরপ্রদেশের রায়বেরিলি, প্রতাপগড়, সুলতানপুর-সহ বিভিন্ন অঞ্চলে কৃষক আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করে। বাবা রামচন্দ্রের নেতৃত্বে কিষান সভার উদ্যোগে কৃষক আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করে। বাবা রামচন্দ্রের গ্রেফতারের পর এই রাজ্যের হরদৈ, বরাবাঁকি, সীতাপুর, বারাইচ প্রভৃতি জেলায় ‘একা’ নামে কৃষক আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে।

9.অসহযোগ আন্দোলনের সময় বিহারের কোন্ কোন্ অঞ্চলে কৃষকবিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে?

উত্তর:-অসহযোগ আন্দোলনের সময় বিহারের সীতামারি, দ্বারভাঙ্গা, ভাগলপুর, মুজফ্ফরপুর, পূর্ণিয়া, মুঙ্গের, মধুবনী প্রভৃতি অঞ্চলে কৃষকবিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে।

10.উত্তরপ্রদেশে কবে, কাদের উদ্যোগে কিষান সভা প্রতিষ্ঠিত হয়?

উত্তর:- উত্তরপ্রদেশে ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে মদনমোহন মালব্যের সমর্থনে গৌরীশংকর মিশ্র ও ইন্দ্রনারায়ণ ত্রিবেদীর উদ্যোগে কিষান সভা প্রতিষ্ঠিত হয়।

11.কৃষক আন্দোলনে বাবা রামচন্দ্রের কীরূপ ভূমিকা ছিল?

উত্তর:- অসহযোগ আন্দোলনের সময় কৃষক আন্দোলনে বাবা রামচন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন- [1] তিনি যুক্তপ্রদেশে গঠিত কিষান সভার নেতৃত্বে কৃষকদের নিয়ে শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তোলেন। [2] তাঁর নেতৃত্বে কিষান সভার আন্দোলন কংগ্রেসের অসহযোগ আন্দোলনের সাথে মিশে গিয়ে জোরালো হয়ে ওঠে ।

12.অসহযোগ আন্দোলনের সময় কারা বারদৌলি অঞ্চলে গঠনমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করেন? এখানে কী ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়?

উত্তর:- অসহযোগ আন্দোলনের সময় গান্ধিবাদী সত্যাগ্রহী নেতা কল্যাণজি মেহতা ও দয়ালজি দেশাই বারদৌলি অঞ্চলে গঠনমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করেন।
বারদৌলিতে হালি প্রথা, সুরাপান, পণপ্রথা প্রভৃতির বিরুদ্ধে এখানকার কৃষকদের সচেতন করে তোলা হয়। গঠনমূলক কর্মসূচি হিসেবে বারদৌলি অঞ্চলে বিদ্যালয়, সত্যাগ্রহ শিবির বা আশ্রম প্রভৃতি গড়ে তোলা হয়।

13. অসহযোগ আন্দোলনের সময় জওহরলাল নেহরু কীভাবে কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন?

উত্তর:- অসহযোগ আন্দোলনের সময় ‘একা আন্দোলনের’ নেতা বাবা রামচন্দ্র গ্রামের কৃষকদের দুর্দশা স্বচক্ষে দেখার অনুরোধ করে কংগ্রেস নেতা জওহরলাল নেহরুকে ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে গ্রামে আসার জানান। এভাবে নেহরু কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন।

14.কবে, কোন্ ঘটনার ফলে গান্ধিজি অহিংস অসহযোগ আন্দোলন প্রত্যাহার করেন?

উত্তর:- ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে (৫ ফেব্রুয়ারি) উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুর জেলার চৌরিচৌরা গ্রামে উত্তেজিত জনতা থানায় অগ্নি সংযোগ করে ২২ জন পুলিশকে পুড়িয়ে মারে। আন্দোলনে হিংসার প্রবেশ ঘটায় গান্ধিজি আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন।

15.চৌরিচৌরার ঘটনাটি কী?

উত্তর:- চৌরিচৌরা হল উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুর জেলার একটি গ্রাম। এখানে অসহযোগ আন্দোলনের সময় ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের ৫ ফেব্রুয়ারি উত্তেজিত জনতা থানায় ২২ জন পুলিশকে পুড়িয়ে মারে।

16.একা আন্দোলন কী?

উত্তর:- কৃষকদের ওপর অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ কর বৃদ্ধি, কর আদায়ে সীমাহীন অত্যাচার, প্রভুর জমি ও খামারে কৃষকদের বিনা বেতনে বেগার শ্রমদানে বাধ্য করা প্রভৃতি কারণে যুক্তপ্রদেশের (বর্তমান উত্তরপ্রদেশ) উত্তর-পশ্চিম অযোধ্যা, অর্থাৎ হরদৈ, বারাবাঁকি, সীতাপুর, বারাইচ প্রভৃতি জেলায় ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের শেষ ও ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের প্রথমভাগে যে আন্দোলন সংঘটিত হয় তা একা আন্দোলন নামে পরিচিত।

17.’একা’ আন্দোলন কাদের নেতৃত্বে সংঘটিত হয়েছিল? কৃষকদের প্রধান শপথ কী ছিল?

উত্তর:- মাদারি পাশি ও বাবা গরিবদাস প্রমুখের নেতৃত্বে ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের শেষ ও ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের প্রথম ভাগে যুক্তপ্রদেশে একা আন্দোলন হয়েছিল। একা আন্দোলনে যোগদানকারী কৃষকরা শপথ গ্রহণ করে যে, [1] তারা নথিভুক্ত করের বেশি অর্থ প্রদান করবে না। [2] অপরাধীদের সাহায্য করবে না। [3] বেগার শ্রম দেবে না। [4] জমি থেকে উৎখার করলেও তারা জমি ছেড়ে চলে যাবে না। [5] তারা পঞ্চায়েতের যাবতীয় সিদ্ধান্ত মেনে চলবে।

18.কবে, কোথায় ‘একা আন্দোলন’ সংঘটিত হয়েছিল?

উত্তর:- ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের শেষ ও ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের প্রথম ভাগে যুক্তপ্রদেশেশ (বর্তমান উত্তরপ্রদেশ) উত্তর-পশ্চিম অযোধ্যা, অর্থাৎ হরদৈ, বারাবাঁকি সীতাপুর, বারাইচ প্রভৃতি জেলায় ‘একা আন্দোলন’ সংঘটিত হয়েছিল।

19.একা আন্দোলনের প্রধান কারণগুলি কী কী?

উত্তর:- একা আন্দোলনের প্রধান কারণগুলি ছিল-[1] কৃষকদের ওপর অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ কর বৃদ্ধি, [2] কর আদায়ে সীমাহীন অত্যাচার [3] প্রভুর জমি ও খামারে কৃষকদের বিনা বেতনে বেগার শ্রমদানে বাধ করা প্রভৃতি।

20.’পতিদার’ ও ‘কুনবি’ কাদের বলা হত?

উত্তর:- পতিদার শব্দের অর্থ হল ‘একখণ্ড জমির মালিক’। পতিদাররা ছিল গুজরাটের একটি ধনী কৃষক সম্প্রদায়। এরা নিজেদের রামচন্দ্রের বংশধর বলে দাবি করত।
গুজরাটের সুরাট জেলার অন্তর্গত বারদৌলির সম্পন্ন ধনী কৃষকদের কুনবি বলা হত।

21.বারদৌলি সত্যাগ্রহ কী?

উত্তর:- গুজরাটের বারদৌলি তালুকের কৃষকদের ওপর রাজস্বের পরিমাণ যথেষ্ট বাড়িয়ে দেওয়া হলে কৃষকরা রাজস্ব প্রদান বন্ধ করে অহিংস উপায়ে সত্যাগ্রহ আন্দোলন শুরু করে। এটি বারদৌলি সত্যাগ্রহ নামে পরিচিত।

22.বারদৌলি সত্যাগ্রহের কারণ কী ছিল? অথবা, বারদৌলি সত্যাগ্রহ আন্দোলন কেন শুরু হয়?

উত্তর:- ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ ভয়ানক বন্যায় গুজরাটের বারদৌলি তালুকে কৃষকদের ফসল নষ্ট হওয়া সত্ত্বেও সরকার সেখানকার কৃষকদের ওপর রাজস্বের হার ৩০ শতাংশ (পরে কমিয়ে ২২ শতাংশ) বাড়িয়ে দেয়। তাই কৃষকরা খাজনা বন্ধের দাবি তোলে। এ ছাড়া ভূমিরাজস্ব কমানোর দাবিতে বারদৌলির কৃষকরা সত্যাগ্রহ আন্দোলন শুরু করে।

23.হালি প্রথা কী? এই প্রথা কোথায় চালু ছিল? অথবা, হালি প্রথা কাকে বলে?

উত্তর:- গুজরাটের সুরাট জেলার বারদৌলি তালুকে নিম্নবর্ণের ‘কালিপরাজ সম্প্রদায়ভুক্ত কৃষকরা উচ্চবর্ণের ‘উজলিপরাজ’ সম্প্রদায়ের মালিকদে জমিতে বংশানুক্রমে শ্রমিকের কাজ করত। উচ্চবর্ণের অধীনে নিম্নবর্ণের মানুষের বংশানুক্রমে এই কাজের প্রথাটি ‘হালি প্রথা’ নামে পরিচিত।
গুজরাটের সুরাট জেলার বারদৌলি তালুকে হালি প্রথা চালু ছিল।

24. বারদৌলির কৃষকদের সচেতনতা বৃদ্ধির কাজে নিযুক্ত দুজন সত্যাগ্রহী নেতার নাম লেখো ?

উত্তর:- বারদৌলির কৃষকদের সচেতনতা বৃদ্ধির কাজে নিযুক্ত দুজন সত্যাগ্রহী নেতা ছিলেন কল্যাণজি মেহতা ও দয়ালজি দেশাই।

25. বারদৌলি সত্যাগ্রহ পরিচালনায় বল্লভভাই প্যাটেলের সহযোগী কয়েকজন নেতার নাম লেখো।

উত্তর:- বারদৌলি সত্যাগ্রহ পরিচালনায় বল্লভভাই প্যাটেলের সহযোগী কয়েকজন নেতা ছিলেন নরহরি পারিখ, রবিশংকর ব্যাস, মোহনলাল পান্ডে প্রমুখ।

26.বারদৌলি সত্যাগ্রহে নেতৃত্বে দেন এমন কয়েকজন উল্লেখযোগ্য নারীর নাম লেখো।

উত্তর:- বারদৌলি সত্যাগ্রহে নেতৃত্ব দেন এমন কয়েকজন উল্লেখযোগ্য নারী ছিলেন মিঠুবেন প্যাটেল, মণিবেন প্যাটেল, সারদা মেহতা, ভক্তি বাই প্রমুখ।

27.বারদৌলি সত্যাগ্রহের সমর্থনে কারা আইনসভা থেকে পদত্যাগ করেন?

উত্তর:-বারদৌলি সত্যাগ্রহের সমর্থনে বোম্বাই আইনসভার সদস্য কে এম মুনসি ও লালজি নারাণজি আইনসভা থেকে পদত্যাগ করেন।

28.সর্বভারতীয় কিষান সভার প্রথম উল্লেখযোগ্য নেতা কারা ছিলেন?

উত্তর:- সর্বভারতীয় কিষান সভার প্রথম উল্লেখযোগ্য নেতা ছিলেন রাম মনোহর লোহিয়া, জয়প্রকাশ নারায়ণ, ই এম এস নাম্বুদ্রিপাদ, বঙ্কিম মুখার্জি, মোহন সিং প্রমুখ ।

29. ফজলুল হক কী নামে পরিচিত ছিলেন? তাঁর কৃষক প্রজা পার্টির প্রতীক কী ছিল?

উত্তর:- আবুল কাশেম ফজলুল হক ‘শের-ই-বঙ্গাল’ নামে পরিচিত ছিলেন। বাংলার ‘কৃষক প্রজা পার্টি’র অন্যতম নেতা ফজলুল হকের কৃষক প্রজা পার্টির প্রতীক ছিল ‘লাঙল’।

30. স্বাধীনতা লাভের পূর্বে ২৬ জানুয়ারি দিনটির গুরুত্ব কী ছিল?

উত্তর:- স্বাধীনতা লাভের পূর্বে ২৬ জানুয়ারি দিনটির গুরুত্ব ছিল যে, জওহরলাল নেহরুর সভাপতিত্বে লাহোর কংগ্রেস অধিবেশনে (১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে) দুটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়-[1] কংগ্রেস ১৯৩০খ্রিস্টাব্দে ২৬ জানুয়ারি স্বাধীনতা দিবস পালন করবে, [2] ভারত পূর্ণ স্বাধীনতা না পাওয়া পর্যন্ত প্রতি বছর ২৬ জানুয়ারি দিনটি স্বাধীনতা দিবস দেবে পালন করা হবে।

31.আইন অমান্য আন্দোলনের সময় কোন্ কোন্ প্রদেশে কৃষক আন্দোলন জোরালো হয়ে ওঠে?

উত্তর:- আইন অমান্য আন্দোলনের সময় উত্তরপ্রদেশ, বিহার, বাংলা, গুজরাট, কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশ, কেরলে, অশ্রুপ্রদেশ, পাঞ্জাব প্রভৃতি প্রদেশে কৃষক আন্দোলন জোরালো হয়ে ওঠে ।

32. আইন অমান্য আন্দোলনের সময় উত্তরপ্রদেশের কৃষক আন্দোলনে কারা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন?

উত্তর:- আইন অমান্য আন্দোলনের সময় উত্তরপ্রদেশের কৃষক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন রফি আহমেদ কিদোয়াই, কালিকাপ্রসাদ কানুনগো, অঞ্জনি কুমার প্রমুখ।

33. বখস্ত আন্দোলন কোথায় এবং কী জন্য হয়েছিল?

‘বখস্ত’ আন্দোলন কারিয়ানন্দ শর্মার নেতৃত্বে ১৯৩৬-৩৮ খ্রিস্টাব্দে বিহারের বারহিয়া তাল, রিওরা, মাজিওয়ানা, আমওয়ারি প্রভৃতি অঞ্চলে হয়েছিল। জমিদারের হাতে কৃষকের বাধা পড়ে থাকা জমিকে ‘বখস্ত’ জমি বলা হয়। জমিদারের হাত থেকে এই জমি ফিরে পাওয়ার দাবিতে ‘বখস্ত’ আন্দোলন গড়ে উঠেছিল।

34.স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপস-কে কী উদ্দেশ্যে ভারতে পাঠানো হয়?

উত্তর:- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ভারতীয় অর্থসম্পদ ও জনশক্তির সহায়তা ব্রিটেনের খুবই প্রয়োজন হয়ে পড়ে। এই পরিস্থিতিতে ভারতের অর্থসম্পদ ও জনশক্তি যুদ্ধে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে ভারতীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনার জন্য ব্রিটিশ পার্লামেন্ট স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্লিপসকে ভারতে পাঠায়।

35. ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় কোন্ কোন্ প্রদেশে কৃষক আন্দোলন শক্তিশালী হয়ে ওঠে?

উত্তর:- ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় বিহার, উত্তরপ্রদেশ, বাংলা, গুজরাট, বোম্বাই, উড়িষ্যা, আসাম, মধ্যপ্রদেশ, মাদ্রাজ প্রভৃতি প্রদেশে কৃষক আন্দোলন শক্তিশালী হয়ে ওঠে।

36. ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় বাংলার কৃষকবিদ্রোহ কীরূপ ছিল?

উত্তর:- • ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় বাংলার মেদিনীপুরের তমলুক মহকুমা, পটাশপুর থানা, খেজুরী থানা, দিনাজপুরের বালুরঘাট প্রভৃতি এলাকায় কৃষকরা জমিদারদের খাজনা দেওয়া বন্ধ করে।

37.তেভাগা’ নামকরণ কেন হয়?

উত্তর:-বাংলার বর্গাদার কৃষক বা ভাগচাষিরা ফ্লাউড কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী জোতদারের কাছ থেকে উৎপন্ন ফসলের দুই-তৃতীয়াংশ অধিকারের দাবিতে কমিউনিস্টদের নেতৃত্বে এক বিরাট আন্দোলন গড়ে তোলে (১৯৪৬ খ্রি.)। উৎপন্ন ফসলের তিনভাগের দুইভাগ পাওয়ার দাবিতে এই আন্দোলন হয়েছিল বলে এর নাম হয় ‘তেভাগা’ আন্দোলন।

38. কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ কী কারণে কৃষক আন্দোলনকে একটি নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে সচেষ্ট ছিলেন?

উত্তর:- কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ কৃষক আন্দোলনকে একটি নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে সচেষ্ট ছিলেন কারণ, তারা চেয়েছিলেন- [1] কৃষক আন্দোলন যাতে হিংসাত্মক পথে না যায়, [2] খাজনা বন্ধের আন্দোলনে দেশপ্রেমিক জমিদাররা অসন্তুষ্ট না হন।

39. মোপলা আন্দোলন কবে, কী উদ্দেশ্যে সংঘঠিত হয়েছিল?

উত্তর:- দক্ষিণ ভারতের মালাবার উপকূল অঞ্চলে ১৮৭৩-১৯২১ খ্রিস্টাব্ নাগাদ মোপলা আন্দোলন হয়েছিল। মোপলা আন্দোলনের কারণ ছিল কৃষকদের উপর জমিদারদের অত্যাচার বন্ধ করা।

প্রশ্ন মান -১

1. অসহযোগ আন্দোলনে মেদিনীপুরের কৃষক আন্দোলনের প্রধান নেতা কে ছিলেন?

উত্তর:- অসহযোগ আন্দোলনে মেদিনীপুরের কৃষক আন্দোলনের প্রধান নেতা ছিলেন বীরেন্দ্রনাথ শাসমল।

2. মহাত্মা গান্ধির প্রকৃত নাম কী?

উত্তর:- মহাত্মা গান্ধির প্রকৃত নাম মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধি।

3. বাবা রামচন্দ্র কে ছিলেন?

উত্তর:- অসহযোগ আন্দোলনের সময় উত্তরপ্রদেশে কিষান সভার নেতা ছিলেন বাবা রামচন্দ্র।

4. একা আন্দোলনের এরূপ নামকরণের কারণ কী?

উত্তর:- একা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী আন্দোলনকারীরা একতাবদ্ধ থাকার প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করে বলে এই আন্দোলনের নাম হয় ‘একা’ বা ‘একতা’ আন্দোলন।

5. একা আন্দোলনের দুজন নেতার নাম লেখো।

উত্তর:- একা আন্দোলনের দুজন নেতা হলেন মাদারি পাশি ও বাবা গরিবদাস।

6. কংগ্রেস কেন একা আন্দোলন থেকে দূরে সরে যায়?

উত্তর:- একা আন্দোলনের শেষদিকে আন্দোলনে হিংসাত্মক কার্যকলাপ ঘটলে কংগ্রেস আন্দোলন থেকে দূরে সরে যায়।

7. বারদৌলি সত্যাগ্রহের পরিণতি কী হয়?

উত্তর:- বারদৌলি সত্যাগ্রহের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার নিযুক্ত কমিটি ৬.০৩ শতাংশ খাজনা বৃদ্ধি অনুমোদন করলে কৃষকরা তা দিতে রাজি হয়।

৪. কাদের নেতৃত্বে বিহারে কিষান সভা গড়ে ওঠে?

উত্তর:- স্বামী সহজানন্দ, যদুনন্দন শর্মা প্রমুখের নেতৃত্বে বিহারে কিষান সভা গড়ে ওঠে।

9. কোন্ ঘটনার প্রতিবাদে বারদৌলির কৃষকরা খাজনা দেওয়া বন্ধ করে?

উত্তর:- রাজস্ব বৃদ্ধির প্রতিবাদে বারদৌলির কৃষকরা খাজনা দেওয়া বন্ধ করে।

10. কে ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে লাহোর কংগ্রেসে সভাপতিত্ব করেন?

উত্তর:- জওহরলাল নেহরু ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে লাহোর কংগ্রেসে সভাপতিত্ব করেন।

11. কংগ্রেস কবে স্বাধীনতা দিবস পালন করে?

উত্তর:- কংগ্রেস ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি প্রথম স্বাধীনতা দিবস পালন করে।

12. গান্ধিজি কোন্ ঘটনার মাধ্যমে আইন অমান্য আন্দোলনের সূচনা করেন?

উত্তর:- গান্ধিজি ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ৬ এপ্রিল গুজরাটের ডান্ডিতে সমুদ্রের জল থেকে লবণ তৈরির মাধ্যমে লবণ আইন ভঙ্গ করে আইন অমান্য আন্দোলনের (১৯৩০-৩৪ খ্রি.) সূচনা করেন।

13. মৌলানা ভাসানি কে ছিলেন?

উত্তর:- মৌলানা ভাসানি ছিলেন আইন অমান্য আন্দোলনের সময় পূর্ববঙ্গের কৃষক আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী মুসলিম কৃষকদের নেতা।

14. কে অস্ত্রপ্রদেশে ‘রায়ত সভা’ প্রতিষ্ঠা করেন?

উত্তর:- এন জি রঙ্গ ১৯৩৩-৩৪ খ্রিস্টাব্দে কৃষকদের নিয়ে অস্ত্রপ্রদেশে ‘রায়ত সভা’ প্রতিষ্ঠা করেন।

15. ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় কোথায় ‘চাষি মল্লা’ গড়ে উঠেছিল?

উত্তর:- ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় উড়িষ্যার তালচেরে ‘চাষি মল্লা’ গড়ে ওঠে।

16. “করেণে ইয়ে মরেলে”-এটি কার উক্তি?

উত্তর:- “করেঙ্গে ইয়ে মরেঙ্গে”-এটি মহাত্মা গান্ধির উক্তি।

You may also like

Madhyamik history

দশম শ্রেণীর ইতিহাসের ধারণা প্রথম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর

১) ভারতের নিম্নবর্গের ইতিহাস চর্চার জনক হলেন- (A) রনজিত গুহ (B) অমলেশ ত্রিপাঠী (C) সুমিত সরকার (D) রামচন্দ্র গুহ উঃ