1 ‘Compendio Spiritual Da Vida Christa’ নামে গ্রন্থটি কোথায় মুদ্রিত হয়েছিল?
উত্তর:- ‘Compendio Spiritual Da Vida Christa’ নামে গ্রন্থটি পোর্তুগিজদের গোয়ার মুদ্রণযন্ত্রে (১৫৬১ খ্রি.) মুদ্রিত হয়েছিল।
2. কোন্ ছাপাখানায় কলকাতার প্রথম ক্যালেন্ডার মুদ্রিত হয়?
উত্তর:- জেমস অগাস্টাস হিকি-এর ছাপাখানায় কলকাতার প্রথম ক্যালেন্ডার মুদ্রিত হয়।
3 ‘Compendio Spiritual Da Vida Christa’ বইটি কোথায় সংরক্ষিত আছে?
উত্তর:- ‘Compendio Spiritual Da Vida Christa’ বইটি নিউইয়র্কের পাবলিক লাইব্রেরিতে সংরক্ষিত আছে।
4.-প্রথম কোন্ বাঙালি ছাপাখানার জন্য অক্ষরের ছাঁচ বা টাইপ তৈরি করেন?
উত্তর:- পঞ্চানন কর্মকার প্রথম বাঙালি হিসেবে ছাপাখানার জন্য অক্ষরের ছাঁচ বা টাইপ তৈরি করেন।
5. বাংলায় ছাপাখানা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কোন্ সাহেবের নাম জড়িত?
উত্তর:- বাংলায় ছাপাখানা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অ্যান্ড্রুজ সাহেবের নাম জড়িত।
6. কোন্ বছর শ্রীরামপুর মিশন প্রেস প্রতিষ্ঠিত হয়?
উত্তর:- ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে শ্রীরামপুর মিশন প্রেস প্রতিষ্ঠিত হয়।
7.. শ্রীরামপুর মিশন থেকে প্রকাশিত প্রথম বাংলা সাপ্তাহিক পত্রিকা কোন্টি?
উত্তর:- শ্রীরামপুর মিশন থেকে প্রকাশিত প্রথম বাংলা সাপ্তাহিক পত্রিকা হল ‘সমাচার দর্পণ’ (১৮১৮ খ্রি.)।
৪. ঢাকা প্রেস কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?
উত্তর:- ঢাকা প্রেস প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে।
9. চিনে কবে মুদ্রণশিল্পের আবিষ্কার হয়?
উত্তর:- ৫৯৩ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ চিনে মুদ্রণশিল্পের আবিষ্কার হয়।
10. চিনের মুদ্রণপ্রযুক্তি কাদের মাধ্যমে ইউরোপে পৌঁছেছিল?
উত্তর:- চিনের মুদ্রণপ্রযুক্তি আরবদের মাধ্যমে ইউরোপে পৌঁছেছিল।
11. বোম্বাইয়ে কবে প্রথম ছাপাখানা স্থাপিত হয়?
উত্তর:- বোম্বাইয়ে ১৬৭০ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ছাপাখানা স্থাপিত হয়।
12. কে, কবে চুঁচুড়ায় প্রথম মুদ্রণযন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর:- চুঁচুড়ায় প্রথম চার্লস উইলকিনস ১৭৭৮ খ্রিস্টাব্দে মুদ্রণযন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন।
13. বাংলার প্রথম সংবাদপত্র কোন্টি?
উত্তর:- বাংলার প্রথম সংবাদপত্র ‘দিগদর্শন’ (১৮১৮ খ্রি.)।
14. ঢাকায় প্রথম কবে ছাপাখানা স্থাপিত হয়?
উত্তর:- ঢাকায় প্রথম ছাপাখানা স্থাপিত হয় ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে।
15. পূর্ববঙ্গের কোথায়, কবে প্রথম ছাপাখানা স্থাপিত হয়?
উত্তর:- পূর্ববঙ্গের রংপুরে প্রথম ছাপাখানা স্থাপিত হয় ১৮৪৭ খ্রিস্টাব্দে।
16. ‘বাঙ্গালা শিক্ষাগ্রন্থ’-টি কে রচনা করেন?
উত্তর:- ‘বাঙ্গালা শিক্ষাগ্রন্থ’-টি রচনা করেন রাধাকান্ত দেব।
17. ‘পাখি সব করে রব’ কবিতাটি কার লেখা?
উত্তর:- ‘পাখি সব করে রব’ কবিতাটি মদনমোহন তর্কালঙ্কারের লেখা।
18. ছাপাখানা থেকে মুদ্রিত গোবিন্দপ্রসাদ দাস রচিত উল্লেখযোগ্য পাঠ্যবই কোন্টি?
উত্তর:- ছাপাখানা থেকে মুদ্রিত গোবিন্দপ্রসাদ দাস রচিত উল্লেখযোগ্য পাঠ্যবই হল ‘ব্যাকরণ সার’।
19. অষ্টাদশ শতকে কোল্টিন্ট কলকাতার সবচেয়ে বড়ো ছাপাখানা ছিল?
উত্তর:- অষ্টাদশ শতকে কলকাতার সবচেয়ে বড়ো ছাপাখানা ছিল ‘অনারেবল কোম্পানিজ প্রেস’।
20. বাবুরাম কত খ্রিস্টাব্দে সংস্কৃত প্রেস প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর:- বাবুরাম ১৮০৭ খ্রিস্টাব্দে সংস্কৃত প্রেস প্রতিষ্ঠা করেন।
21. আনুমানিক কবে, কোন্ দেশে সর্বপ্রথম মুদ্রণশিল্পের উদ্ভব ঘটে?
উত্তর:- আনুমানিক ৮৬৮ খ্রিস্টাব্দে চিনে সর্বপ্রথম মুদ্রণশিল্পের উদ্ভব ঘটে।
22. কে. কবে আধুনিক মুদ্রণযন্ত্র আবিষ্কার করেন?
উত্তর:- জার্মানির জোহানেস গুটেনবার্গ ১৫৫৪ খ্রিস্টাব্দে আধুনিক মুদ্রণযন্ত্র আবিষ্কার করেন।
23. কে ‘ছাপাখানার জনক’ নামে পরিচিত?
উত্তর:- জার্মানির জোহানেস গুটেনবার্গ ‘ছাপাখানার জনক’ নামে পরিচিত।
24. ভারতের কোথায়, কারা প্রথম আধুনিক মুদ্রণযন্ত্র স্থাপন করেন?
উত্তর:- ভারতের গোয়ায় পোতুর্গিজরা প্রথম আধুনিক মুদ্রণযন্ত্র স্থাপন করেন।
25. সবচেয়ে পুরোনো বাংলা মুদ্রিত বইয়ের নমুনা কোথায় পাওয়া যায়?
উত্তর:- সবচেয়ে পুরোনো বাংলা মুদ্রিত বইয়ের নমুনা পাওয়া যায় ১৬৮২ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে মুদ্রিত একটি বইয়ে।
26. বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম চিত্রিত গ্রন্থের নাম লেখো।
উত্তর:- বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম চিত্রিত গ্রন্থটি হল ১৮১৬ সালে কলকাতার ফেরিস অ্যান্ড কোম্পানির ছাপাখানা থেকে গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্যের উদ্যোগে প্রকাশিত রায়গুণাকর ভারতচন্দ্রের ‘অন্নদামঙ্গল’ কাব্য।
27. বাংলা মুদ্রণশিল্পে পঞ্চানন কর্মকারের অবদান কী?
উত্তর:- পঞ্চানন কর্মকার উন্নত বাংলা অক্ষরের ছাঁচ বা টাইপ তৈরি করেন।
28. লাইনো টাইপ দিয়ে প্রথম কোন্ বইটি ছাপা হয়?
উত্তর:- লাইনো টাইপ দিয়ে প্রথম ন্যাথানিয়েল ব্রাসি হালেদ রচিত ‘এ গ্রামার অব দ্য বেঙ্গল ল্যাঙ্গুয়েজ’ (১৭৭৮ খ্রিস্টাব্দ) বইটি প্রকাশিত হয়।
29. শ্রীরামপুর ছাপাখানা থেকে মুদ্রিত একটি বাংলা সাহিত্যের নাম। লেখো।
উত্তর:- শ্রীরামপুর ছাপাখানা থেকে মুদ্রিত একটি বাংলা সাহিত্য হল রামরাম বসুর ‘প্রতাপাদিত্য চরিত্র’।
30. শিশুশিক্ষা-বিষয়ক প্রথম উল্লেখযোগ্য বাংলা বই কোনটি?
উত্তর:- শিশুশিক্ষা-বিষয়ক প্রথম উল্লেখযোগ্য বাংলা বই হল মদনমোহন তর্কালঙ্কারের লেখা ‘শিশুশিক্ষা’।
31. কে, কবে ‘বর্ণপরিচয়’ গ্রন্থটি রচনা করেন?
উত্তর:- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে ‘বর্ণপরিচয়’ গ্রন্থটি রচনা করেন।
32. এশিয়াটিক সোসাইটির পত্রিকার নাম কী ছিল?
উত্তর:- এশিয়াটিক সোসাইটির পত্রিকার নাম ছিল ‘এশিয়াটিক রিসার্চেস’।
33. ‘বিদ্যাসাগর সাট’ বলতে কী বোঝো?
উত্তর:- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বাংলা মুদ্রণের কাজে সহায়তার জন্য অক্ষর সংযোজনের বিশেষ পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। এই পদ্ধতি ‘বিদ্যাসাগর সাট’ নামে পরিচিত।
34. ‘অন্নদামঙ্গল’ গ্রন্থের চিত্রগুলি কে এঁকেছেন?
উত্তর:- ‘অন্নদামঙ্গল’ গ্রন্থের চিত্রগুলি এঁকেছিলেন শিল্পী রামচাঁদ রায়।
35. প্রথম কোথায় প্রসেস প্রিন্টিং-এর বিকাশ শুরু হয়?
উত্তর:- উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর ইউ রায় অ্যান্ড সন্স নামে ছাপাখানায় প্রথম প্রসেস প্রিন্টিং-এর বিকাশ শুরু হয়।
36. কে ‘টুনটুনির বই’ রচনা করেন?
উত্তর:- উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ‘টুনটুনির বই’ রচনা করেন।
37. ‘শিশুসেবধি’ গ্রন্থটি কে রচনা করেন?
উত্তর:- ‘শিশুসেবধি’ গ্রন্থটি রচনা করেন ক্ষেত্রমোহন দত্ত।
প্রশ্ন মান-২
১.*ভারতের সর্বপ্রথম কবে, কারা, কোথায় আধুনিক মুদ্রণযন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে?
উত্তর:- ভারতে সর্বপ্রথম ১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দে পোর্তুগিজরা গোয়ায় আধুনিক মুদ্রণযন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে।
২.কারা প্রথম মুদ্রণযন্ত্রের সাহায্যে বাংলা বই ছাপায়?
উত্তর:- পোর্তুগিজ মিশনারিরা সর্বপ্রথম পোর্তুগালের রাজধানী লিসবন থেকে রোমান হরফে বাংলা বই ছাপায় এবং তা বাংলায় নিয়ে আসে।
৩.”আধুনিক ছাপাখানায় ব্যবহারের উপযোগী বাংলা অক্ষরের টাইপ নির্মাণে কাদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে?
উত্তর:- আধুনিক ছাপাখানায় ব্যবহারের উপযোগী বাংলা অক্ষরের টাইপ প্রথম তৈরি করেন চার্লস উইলকিনস। পরবর্তীকালে তাঁর সহযোগী পঞ্চানন কর্মকার আরও উন্নত টাইপ তৈরি করেন। পরবর্তীকালে সুরেশচন্দ্র মজুমদার আরও উন্নত বাংলা টাইপ তৈরি করে বাংলা মুদ্রণব্যবস্থাকে আরও উন্নত করে তোলেন।
৪. কলকাতায় প্রথম মুদ্রিত বই কোটিন্ট?
উত্তর:- ১৭৭৭ খ্রিস্টাব্দে জেমস অগাস্টাস হিকিকর্তৃক প্রতিষ্ঠিত কলকাতার ছাপাখানায় ১৭৭৭ খ্রিস্টাব্দে দুটি ইংরেজি ক্যালেন্ডার ছাপা হয়। এই ক্যালেন্ডার আংশিক বইয়ের আকারের হওয়ায় কেউ কেউ একে কলকাতায় মুদ্রিত প্রথম বই বলে মনে করেন।
৫.’জাইলোগ্রাফি’ পদ্ধতি কী?
উত্তর:- খ্রিস্টীয় অষ্টম শতকে চিনে কাঠ বা পাথরের ব্লকের দ্বারা মুদ্রণকৌশল আবিষ্কৃত হয়। ব্লকের দ্বারা এই মুদ্রণ পদ্ধতি ‘জাইলোগ্রাফি’ নামে পরিচিত।
৬.বাংলার ছাপাখানার বিকাশে পঞ্চানন কর্মকারের ভূমিকা কী ছিল?
উত্তর:- বাংলার ছাপাখানার বিকাশে পঞ্চানন কর্মকারের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল। [1] তিনি ছিলেন বাংলা ভাষার ছাপাখানার হরফ নির্মাণের অন্যতম রূপকার। [2] তিনি বাংলা ছাপাখানায় সচল ধাতু হরফের প্রচলন করেছিলেন।
7.*সুরেশচন্দ্র মজুমদার কে ছিলেন?
উত্তর:- সুরেশচন্দ্র মজুমদার ছিলেন আনন্দবাজার প্রকাশনা সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা। তিনি রাজশেখর বসুর পরামর্শে বাংলা অক্ষর নিয়ে নানা পরীক্ষানিরীক্ষা করে ‘লাইনো টাইপ’ নামে এক উন্নত বাংলা অক্ষরের টাইপের নির্মাণ করেন।
৮. লাইনো টাইপ কী?
উত্তর:- ‘লাইনো টাইপ’ হল সুরেশচন্দ্র মজুমদার কর্তৃক নির্মিত এক ধরনের উন্নত বাংলা অক্ষরের টাইপ। এই প্রকার টাইপে পুরো লাইন ধরে ছাপা হত এবং কোনো ধরনের পরিবর্তন করতে চাইলে পুরো লাইনটিকেই নতুন রূপে বানাতে হত।
৯. ছাপাখানা প্রতিষ্ঠার পূর্বে বাংলায় গণশিক্ষার পরিস্থিতি কীরূপ ছিল?
উত্তর:- ছাপাখানা প্রতিষ্ঠার পূর্বে বাংলায় মুদ্রিত বই না থাকায় হাতে লেখা বই ছিল শিক্ষার মাধ্যম। এই বহুমূল্য বই সমাজের মুষ্টিমেয় উচ্চবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীরা কিনলেও তা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে ছিল। এজন্য তখন বাংলায় গণশিক্ষার প্রসার ঘটেনি।
১০.বাংলার মুদ্রণের ইতিহাসে বটতলা প্রকাশনার গুরুত্ব কী?
উত্তর:- বাংলার মুদ্রণের ইতিহাসে বটতলা প্রকাশনার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। [1] এই প্রকাশনীতে কম খরচে বেশি বই ছাপা হত। [2] এই ছাপায় হ্যান্ডমেড পেপারের ব্যাপক ব্যবহার দেখা যায়। ফলে স্বদেশি কারিগরির মুনশিয়ানা ফুটে ওঠে। এ ছাড়া পুঁথি, পাঁচালি এবং অনুবাদ সাহিত্যের প্রকাশনার প্রসার ঘটে।
১১.*ছাপাখানার প্রতিষ্ঠা বাংলায় শিক্ষার প্রসারে কী ধরনের সুবিধা করে দেয়?
উত্তর:- আধুনিক ছাপাখানার প্রতিষ্ঠা বাংলায় শিক্ষার প্রসারে নানাভাবের সহায়তা করে। [1] ছাপাখানায় মুদ্রিত বিপুল সংখ্যক বই অল্প সময়ে পাঠক ও শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে যায়। [2] ছাপাখানায় মুদ্রিত বইয়ে মূল্য হাতে লেখা বইয়ের চেয়ে অনেক কম হওয়ায় দরিদ্র ও সাধার পড়ুয়ারা ছাপাখানার বইপত্র কিনতে সক্ষম হয়। [3] ছাপাখানাগুলিতে বা বাংলা বই মুদ্রিত হওয়ায় মাতৃভাষা বাংলায় শিক্ষা গ্রহণ সম্ভব হয়।
১২.শ্রীরামপুর ছাপাখানা থেকে প্রকাশিত দুটি সংবাদপত্রের নাম লেখো।
উত্তর:- শ্রীরামপুর ছাপাখানা থেকে প্রকাশিত দুটি উল্লেখযোগ্য সংবাদপত্র ছিল মাসিক ‘দিগদর্শন’ (১৮১৮ খ্রি.) এবং সাপ্তাহিক ‘সমাচার দর্পণ (১৮১৮ খ্রি.)।
১৩.শ্রীরামপুর ছাপাখানা থেকে কোন্ কোন্ ভাষায় বইপত্র প্রকাশিত হয়?
উত্তর:- শ্রীরামপুর ছাপাখানা থেকে বাংলা, হিন্দি, অহমীয়া, উড়িয়া, মারাঠি, সংস্কৃত-সহ বিভিন্ন ভারতীয় ভাষায় বইপত্র প্রকাশিত হয়।
১৪. শ্রীরামপুর ছাপাখানা থেকে কোন্ ধরনের বইপত্র প্রকাশিত হয়?
উত্তর:- শ্রীরামপুর ছাপাখানা থেকে ‘বাইবেল’, ‘রামায়ণ’, ‘মহাভারত’, প্রাচীন ভারতীয় বিভিন্ন সাহিত্যের অনুবাদ, হিতোপদেশ, বিভিন্ন গবেষণামূলক প্রবন্ধ প্রভৃতি বইপত্র প্রকাশিত হয়।
১৫. বাংলার ছাপাখানা বিকাশে শ্রীরামপুর মিশন প্রেসের অবদান কী?
উত্তর:- বাংলার ছাপাখানার বিকাশে শ্রীরামপুর মিশন প্রেসের উল্লেখযোগ্য অবদান ছিল, এখান থেকে-[1] বিভিন্ন ভারতীয় ভাষায় বাইবেলের অনুবাদ গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। [2] প্রাচীন ভারতীয় বিভিন্ন সাহিত্যের অনুবাদ গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। [3] বিভিন্ন স্কুল পাঠ্যবই প্রকাশিত হয়। [4] ‘দিগদর্শন’, ‘সমাচার দর্পণ’, ‘বেঙ্গল গেজেট’-সহ বিভিন্ন সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়।
১৬ “প্রতাপাদিত্য চরিত্র’ গ্রন্থটি কবে, কোথা থেকে প্রকাশ করেন ?
উত্তর:- রামরাম বসু ‘প্রতাপাদিত্য চরিত্র’ গ্রন্থটি ১৮০১ খ্রিস্টাব্দে শ্রীরামপুর ছাপাখানা থেকে প্রকাশ করেন।
১৭. উইলিয়াম কেরি কে ছিলেন?
উত্তর:- উইলিয়াম কেরি ছিলেন শ্রীরামপুরের একজন খ্রিস্টান মিশনারি। তাঁর উল্লেখযোগ্য কীর্তি হল ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে শ্রীরামপুরে একটি আধুনিক ছাপাখানার প্রতিষ্ঠা। শিক্ষার প্রসারের উদ্দেশ্যে তিনি বাংলার বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন। বাংলা ভাষার উন্নতির ক্ষেত্রেও তাঁর অসামান্য অবদান রয়েছে।
১৮.রামরাম বসু কে ছিলেন?
উত্তর:- রামরাম বসু ছিলেন শ্রীরামপুর মিশনের মিশনারি উইলিয়াম কেরির মুনশি। তিনি ‘প্রতাপাদিত্য চরিত্র’ গ্রন্থটি রচনা করেন।
১৯.শিক্ষার প্রসারে শ্রীরামপুর ছাপাখানার অবদান কী?
উত্তর:- শিক্ষার প্রসারে শ্রীরামপুর ছাপাখানার গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল। এখানে সাহিত্য, শিল্প, বিজ্ঞান, সমাজসংস্কার প্রভৃতি বিভিন্ন বিষয়ে বইপত্র ছাপা হত। বাংলা গদ্য সাহিত্যের প্রসারে এই ছাপাখানার ভূমিকা ছিল অসীম।
২০.ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য কোন্ কোন্ ছাপাখানা থেকে বইপত্র ছাপা হত?
উত্তর:- ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য শ্রীরামপুর ছাপাখানা, ইন্দুস্তানি প্রেস, পারসিয়ান প্রেস, সংস্কৃত প্রেস প্রভৃতি স্থাপাখানা থেকে বইপত্র ছাপা হত।
২১.শ্রীরামপুর ছাপাখানা থেকে বিপুল সংখ্যক বইপত্র ছাপার একটি পরিসংখ্যান দাও।
উত্তর:- শ্রীরামপুর ছাপাখানায় ১৮০১-৩২ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে অন্তত ৪০টি ভাষায় ২ লক্ষেরও বেশি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়।
২২.শিক্ষার প্রসারে শ্রীরামপুর মিশনারিদের কী উদ্যোগ ছিল?
উত্তর:- শ্রীরামপুর মিশনারিরা শিক্ষাবিস্তারের উদ্দেশ্যে ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে বাংলাদেশে ৬,৭০৩ জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে ১০৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় গড়ে তোলেন। এ ছাড়া নারীশিক্ষার জন্য বিদ্যালয়, উচ্চশিক্ষার জন্য শ্রীরামপুরে এশিয়ার প্রথম ডিগ্রি কলেজ (১৮১৮ খ্রি.) প্রভৃতিও তাঁদের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়।
২৩.বাংলায় মুদ্রণশিল্পের সঙ্গে যুক্ত কোন্ কোন্ নতুন পেশার সৃষ্টি হয়?
উত্তর:-বাংলায় মুদ্রণশিল্পের সঙ্গে যুক্ত কাগজ উৎপাদন, কাগজ বিক্রি, বই ছাপানো, বই বাঁধাই, বই বিক্রি প্রভৃতি নতুন পেশার সৃষ্টি হয়।
২৪. ঢাকায় প্রথম কে, কবে ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর:- ঢাকায় প্রথম আলেকজান্ডার বারবেখ ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করেন ।
২৫.বিদ্যাসাগরের ‘বর্ণপরিচয়’ প্রকাশিত হওয়ার আগে বিভিন্ন ছাপাখানা থেকে প্রকাশিত শিশুশিক্ষা-বিষয়ক কয়েকটি বাংলা গ্রন্থের নাম লেখো।
উত্তর:-বিদ্যাসাগরের ‘বর্ণপরিচয়’ প্রকাশিত হওয়ার আগে বিভিন্ন ছাপাখানা থেকে প্রকাশিত শিশুশিক্ষা-বিষয়ক কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হল শ্রীরামপুর মিশন প্রণীত ‘লিপিধারা’ (১৮১৫ খ্রি.), রাধাকান্ড দেব রচিত ‘বাঙ্গালা শিক্ষাগ্রন্থ’ (১৮২১ খ্রি.), স্কুল বুক সোসাইটি কর্তৃক দুই খণ্ডে প্রকাশিত ‘বর্ণমালা’ (সম্ভবত ১৮৫৩-৫৪ খ্রি.), ক্ষেত্রমোহন দত্ত কর্তৃক দুই খণ্ডে রচিত ‘শিশুসেবধি’ (১৮৫৪ খ্রি.) প্রভৃতি।
২৬. মদনমোহন তর্কালঙ্কার কে ছিলেন?
উত্তর:- মদনমোহন তর্কালঙ্কার ছিলেন উনিশ শতকের বাংলার অন্যতম পন্ডিত এবং নবজাগরণের অন্যতম অগ্রদূত। ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের অধ্যাপক মদনমোহন বাংলা ভাষার বিকাশ ও বাংলায় শিশুশিক্ষার প্রসারে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। তিনি শিশুদের শিক্ষার জন্য ‘শিশুশিক্ষা’ নামের বিখ্যাত গ্রন্থটি লেখেন।
২৭. ‘স্থানীয় স্কুল সম্বন্ধে আভাস’ কী?
উত্তর:- শ্রীরামপুর মিশনের মিশনারি জোশুয়া মার্শম্যান বাংলার গ্রামাঞ্চলে বাংলা ভাষায় গণিত, বিজ্ঞান, ইতিহাস, ভূগোল প্রভৃতি বিষয়ে শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। এই পরিকল্পনা ‘স্থানীয় স্কুল সম্বন্ধে আভাস’ নামে পরিচিত।
২৮. শিশুশিক্ষার ক্ষেত্রে মদনমোহন তর্কালঙ্কারের অবদান কী?
উত্তর:- বাংলার শিশুদের মধ্যে শিক্ষার প্রসারের উদ্দেশ্যে মদনমোহন তর্কালঙ্কার ‘শিশুশিক্ষা’ নামে একটি গ্রন্থ রচনা করেন। ‘শিশুশিক্ষা’র প্রথম ভাগ ১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দে, দ্বিতীয় ভাগ ১৮৫০ খ্রিস্টাব্দে এবং পরবর্তীকালে তৃতীয় ভাগ ও ‘বোধোদয়’ শিরোনামে চতুর্থ ভাগ প্রকাশিত হয়। ‘শিশুশিক্ষা’ বাংলার শিশুদের মধ্যে শিক্ষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়।
২৯.”বাংলায় ছাপাখানা প্রতিষ্ঠিত হলে সেগুলি থেকে মুদ্রিত কয়েকটি জনপ্রিয় পাঠ্যবইয়ের নাম লেখো।
উত্তর:- বাংলায় ছাপাখানা প্রতিষ্ঠিত হলে সেগুলি থেকে বিভিন্ন বইপত্র প্রকাশিত হতে থাকে। সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল গোবিন্দ প্রসাদ দাস রচিত ‘ব্যাকরণ সার’, প্রাণলাল চক্রবর্তী রচিত ‘অঙ্কবোধ’, কেদারেশ্বর চক্রবর্তী রচিত ‘বাঙ্গালার ইতিহাস’, আনন্দকিশোর সেন রচিত ‘অর্থের সার্থকতা’, দীননাথ সেন রচিত ‘বাংলাদেশ ও আসামের সংক্ষিপ্ত বিবরণ’ এবং ‘ঢাকা জেলার ভূগোল’ এবং ‘সংক্ষেপে ঐতিহাসিক বিবরণ’ প্রভৃতি।
৩০.*ব্যাবসায়িক উদ্দেশ্যে বাংলার ছাপাখানাগুলিতে প্রথমদিকে কী ধরনের ছাপার কাজ হত?
উত্তর:- ব্যাবসায়িক উদ্দেশ্যে বাংলার ছাপাখানাগুলিতে প্রথমদিকে সরকারি কাগজপত্র, শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন পাঠ্যবই, পঞ্জিকা, ভ্রমণকাহিনি চিকিৎসাবিজ্ঞান-বিষয়ক বই, কবিতা, নাটক, উপন্যাস, গানের বই ব্যাকরণ, অভিধান, ইউরোপের ঘটনাবলি নিয়ে লেখা বই প্রভৃতি ছাপার কাজ হত।
৩১.*ছাপাখানাগুলিতে স্কুলকলেজের নীতিশিক্ষা-বিষয়ক কোন্ কোন্ গ্রন্থ ছাপা হত?
উত্তর:- ছাপাখানাগুলিতে স্কুলকলেজের নীতিশিক্ষা-বিষয়ক ‘হিতোপদেশ ‘বত্রিশ সিংহাসন’, ‘তোতা ইতিহাস’, ‘বোধোদয়’, ‘বেতাল পঞ্চবিংশতি ‘নীতিকথা’ প্রভৃতি গ্রন্থ ছাপা হত।
৩২.*ছাপাখানাগুলিতে ছাত্রছাত্রীদের জন্য কোন্ কোন্ বিষয়ের পাঠ্যবই ছাপা হত?
উত্তর:- ছাপাখানাগুলিতে ছাত্রছাত্রীদের জন্য ভূগোল, ইতিহাস, সাহিত্য, গণিত, প্রাণীবিদ্যা, উদ্ভিদবিদ্যা, কারিগরিবিদ্যা, চিকিৎসাশাস্ত্র, নীতিশিক্ষ প্রভৃতি বিষয়ের পাঠ্যবই ছাপা হত।
৩৩. উনবিংশ শতকে বাংলায় ছাপাখানার প্রসারের একটি পরিসংখ্যান দাও।
উত্তর:- কলকাতায় ১৭৭৭ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ছাপাখানার প্রতিষ্ঠা হয়। ১৮০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে কলকাতায় ১৭টি ছাপাখানা প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮৮৫-৮৬ খ্রিস্টাব্দে সারা ভারতে ১০৯৪ টি ছাপাখানা ছিল। এর মধ্যে বাংলা প্রদেশে ছিল ২২৯টি ছাপাখানা।
৩৪. ব্যক্তিগত উদ্যোগে ছাপা বইয়ের প্রকৃতি কীরূপ ছিল?
উত্তর:- উনিশ শতকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ছাপা বইগুলির প্রকৃতি বা বৈশিষ্ট্য ছিল-[1] বইগুলির মুদ্রণ ও সাজসজ্জা আকর্ষণীয় করার চেষ্টা হত। [2] ছাত্রদের পাঠ্যপুস্তক এবং সহায়ক পুস্তক প্রচুর প্রকাশিত হত। [3] অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্যাবসায়িক লাভই বই প্রকাশের অন্যতম লক্ষ্য হত।
৩৫. *উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী কে ছিলেন?
উত্তর:- উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ছিলেন একজন খ্যাতনামা শিশুসাহিত্যিক, চিত্রকর, সুরকার, প্রকাশক এবং বাংলায় ছাপাখানার অগ্রপথিক। তিনি কলকাতায় ইউ রায় অ্যান্ড সন্স নামে একটি ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করে মুদ্রণশিল্পের উন্নতির বিষয়ে নানা পরীক্ষানিরীক্ষা করেন।
৩৬. উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর লেখা প্রথম বই কোনটি ? এটি কোথা থেকে প্রকাশিত হয়?
উত্তর:- উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর লেখা প্রথম বই হল ‘ছেলেদের রামায়ণ’।
উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর ‘ছেলেদের রামায়ণ’ বইটি যোগীন্দ্রনাথ সরকারের সিটি বুক সোসাইটি থেকে প্রকাশিত হয়।
৩৭. “উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী কবে, কোথায় আধুনিক ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর:- উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার শিবনারায়ণ দাস লেনে আধুনিক ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করেন।
৩৮. উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর লেখা কয়েকটি গ্রন্থের নাম লেখো।
উত্তর:- উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর লেখা কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হল ‘ছেলেদের রামায়ণ’, ‘ছেলেদের মহাভারত’, ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’, পশুপাখি ও ভ্রমণকাহিনি নিয়ে ‘সেকালের কথা’, বাংলার লোককথা নিয়ে লেখা ‘টুনটুনির বই’ প্রভৃতি।
৩৯. কে, কবে ‘সন্দেশ’ পত্রিকাটি প্রকাশ করেন? এটি কাদের জন্য প্রকাশিত হয়?
উত্তর:- উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে ‘সন্দেশ’ পত্রিকাটি প্রকাশ করেন।
‘সন্দেশ’ পত্রিকাটি ছোটোদের জন্য প্রকাশিত হয়।
৪০. উপেন্দ্রকিশোরের ছাপাখানার বিশেষ কৃতিত্ব কী ছিল? অথবা, ‘প্রসেস প্রিন্টিং’ সম্বন্ধে কী জান?
উত্তর:- উপেন্দ্রকিশোরের ছাপাখানার বিশেষ কৃতিত্ব ছিল প্রসেস প্রিন্টিং নামে এক ধরনের উন্নত মুদ্রণ কৌশল আবিষ্কার। তিনি তাঁর ইউ রায় অ্যান্ড সন্স নামে ছাপাখানায় নিরন্তর পরীক্ষানিরীক্ষা চালিয়ে এই উন্নত মুদ্রণ কৌশলের উদ্ভাবন করেন।